প্রচ্ছদঅর্থ-বাণিজ্যকুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী সিদল এখন ভারতেও রপ্তানি

কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী সিদল এখন ভারতেও রপ্তানি

নিজস্ব প্রতিবেদক

কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার সলফা গ্রামে বহুকাল ধরে সিদল তৈরি হচ্ছে। তাদের তৈরি সিদল দেশের চাহিদা মিটিয়ে এখন ভারতেও রপ্তানি হচ্ছে। সলফা গ্রামের কয়েকটি পরিবার তাদের বাপ-দাদার আদি এই পেশাকে এখনো ধরে রেখেছেন।

এক সময় এই গ্রামের ৪০টি পরিবার সিদল তৈরির কাজ করতো। তবে বর্তমানে অনেকে পেশা পরিবর্তন করে অন্য পেশায় চলে গেছেন। উপজেলার সলফা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মাচায় সিদল শুকানোর কাজ করছেন রবীন্দ্র চন্দ্র ও বিষ্ণু চন্দ্র সরকার। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সিদল প্রস্তুত করতে সময় পার করেন তারা।

মল সূত্রধর বলেন, দুই জাতের সিদল তৈরি হয়। একটি পোয়া এবং অন্যটি পুঁটি মাছের। পোয়া মাছ চট্টগ্রাম থেকে সংগ্রহ করা হয়। পুঁটি মাছ মেঘনা ও সিলেট এলাকা থেকে আসে। পুঁটি মাছ আনার পর এগুলোর পেট কাটতে হয়। এই এলাকার প্রায় ১০০ নারী প্রতিদিন এই কাজ করেন।

মাছের পেট কেটে জাল দিয়ে তেল ওঠানো হয়। ওই তেল নারীদের কাছ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে কিনে রাখেন রবীন্দ্র চন্দ্র ও বিষ্ণু চন্দ্র সরকার। এরপর মাছগুলো মাচায় শুকানো হয়। মাছ শুকানোর এক মাস পর মটকার ভেতর ঢুকানো হয়। তখন ওই তেল ব্যবহার করা হয়।

মন্টু চন্দ্র সরকার আরও বলেন, বংশ পরম্পরায় তারা এই কাজ করে আসছেন। এক সময় নদী-নালা, খাল-বিল, জলাশয় উন্মুক্ত থাকায় প্রচুর মাছ পাওয়া যেত। এখন আর এলাকায় মাছ পাওয়া যায় না। মাছ সব কিনে আনতে হয়। বাজারে সিদলের চাহিদা থাকলেও পুঁজির অভাবে বেশি তৈরি করতে পারছেন না।

তাদের তৈরি সিদল ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, সিলেট, ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় যায়। এছাড়া ভারতের আগরতলা এবং সোনামুড়ায় তাদের কিছু পাইকার আছে। তারা এসে সিদল নিয়ে যান।

এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দীন ভূঞা জনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সলফা গ্রামের কয়েকটি পরিবার সিদল প্রস্তুত করছে। যা দেশীয় চাহিদা মেটিয়ে ভারতেও রপ্তানি হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও পড়ুন

googlee2fa12e91d785426%20(1).html