শনিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৪
প্রচ্ছদঅর্থ-বাণিজ্যদেশজুড়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের প্রভাবে ব্যাংক লেনদেনে বড় ধরনের পতন

দেশজুড়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের প্রভাবে ব্যাংক লেনদেনে বড় ধরনের পতন

নিজস্ব প্রতিবেদক

গত জুলাইয়ের প্রায় পুরোটা সময় দেশব্যাপী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের প্রভাবে দেশের অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়ে। আওয়ামী লীগ সরকার এই আন্দোলন দমাতে ইন্টারনেট বন্ধ, কারফিউ জারি এবং সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছিল।

এর ফলে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও আর্থিক কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দেয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, গত জুলাই মাসে ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা কমে যায়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জুলাই মাসে ব্যাংকের মাধ্যমে মোট ৫ লাখ ৬৬ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে।

এর আগের মাস, জুনে, এই পরিমাণ ছিল ৭ লাখ ১৩ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা। ফলে লেনদেনের পরিমাণ এক মাসের ব্যবধানে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৩৪৭ কোটি টাকা কমে যায়, যা ২০ দশমিক ৬৪ শতাংশের পতন।

এসময় চেক, ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (ইএফটি), ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) এবং এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন কমে যায়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লেনদেন কমেছে চেকের মাধ্যমে, তারপর ইন্টারনেট ব্যাংকিং ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে।

ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে সরকার গত ১৭ জুলাই মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করে এবং ১৮ জুলাই ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটও বন্ধ করে দেয়। এর পর থেকে ১০ দিন মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ ছিল এবং টানা পাঁচদিন সব ধরনের ইন্টারনেট সেবা বন্ধ ছিল। এর ফলে ব্যাংকের লেনদেনও ব্যাহত হয়।

চেকের মাধ্যমে গত জুলাই মাসে ১ লাখ ৮২ হাজার ২ কোটি টাকার লেনদেন হয়, যা জুন মাসের ২ লাখ ৩৪ হাজার ৯৭৯ কোটি টাকার তুলনায় ৫২ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা কম।

এছাড়া, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে লেনদেনও ২১ দশমিক ১২ শতাংশ কমে যায়। জুন মাসে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকার লেনদেনের বিপরীতে জুলাই মাসে ১ লাখ ২২ হাজার ৯২৩ কোটি টাকার লেনদেন হয়।

ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে জুলাই মাসে ৮২ হাজার ৫৭৬ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে, যা জুনের তুলনায় ২১ হাজার ৯২৯ কোটি টাকা কম।

সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, ইন্টারনেট বন্ধ, কারফিউ এবং সাধারণ ছুটি এসব পদক্ষেপের ফলে ব্যাংকের লেনদেন ব্যাপকভাবে কমে গেছে। বিশেষ করে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকার কারণে অনলাইন ব্যাংকিং এবং মোবাইল ব্যাংকিং সেবাগুলোতে সরাসরি প্রভাব পড়েছে।

আন্দোলনের প্রভাব কাটিয়ে উঠার পর, সিটি ব্যাংকসহ কিছু ব্যাংকের আমানত বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে।

সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন জানান, গত দুই মাসে তাদের ব্যাংকের আমানত ৫ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকা বেড়ে ৪৮ হাজার ২৮২ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।

আন্দোলনের কারণে দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ব্যাংকিং লেনদেন কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে, তবে কিছু ব্যাংক ধীরে ধীরে পুনরুদ্ধারের দিকে যাচ্ছে।

এই বিভাগের আরও পড়ুন

googlee2fa12e91d785426%20(1).html