আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে খাগড়াছড়িতে শীতজনিত রোগের প্রকোপ বেড়েই চলেছে। জেলা সদর হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা ধারণক্ষমতার চার গুণ ছাড়িয়ে যাওয়ায় হাসপাতালের বারান্দাতেও চলছে চিকিৎসা। আক্রান্ত শিশুদের বেশিরভাগের বয়স দুই থেকে আট মাস। জনবল সংকটের কারণে রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা।
বুধবার (৬ নভেম্বর) সকালে খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের বারান্দাতেও রোগীদের চিকিৎসা চলছে। শিশু ওয়ার্ডের শয্যা সংকটের কারণে বাধ্য হয়ে বারান্দায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। শ্বাসকষ্ট, জ্বর, ঠান্ডা ছাড়াও শিশুরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায়। ১৫ শয্যার শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে অন্তত ৬২ জন। প্রতিদিন বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছে কয়েকশ রোগী। ভর্তিকৃত রোগীদের বেশিরভাগই ডায়রিয়া-বমি ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত।
খাগড়াছড়ির মাইসছড়ি থেকে আসা এক শিশুর স্বজন মিলন ত্রিপুরা বলেন, “মঙ্গলবার থেকে দুই ছেলের জ্বর। আজকে (গতকাল) হাসপাতালে নিয়ে আসলাম।”
খাগড়াছড়ির জেলা সদরের মুসলিম পাড়ার বাসিন্দা মো. মামুন বলেন, “ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর এখন বাচ্চাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। এখনো ভর্তি করাইনি। ছেলের প্রচণ্ড জ্বর। হাসপাতালের চিকিৎসক কম। আজকে শিশু ওয়ার্ডে একজন মাত্র চিকিৎসক আছেন। এখনো ছেলেকে দেখাতে পারিনি।”
জনবল কম থাকায় বাড়তি রোগীর সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন নার্সরা। রোগীদের সঠিকভাবে সেবা দিতে পারছেন না বলে স্বীকার করেছেন শিশু ওয়ার্ডের ইনচার্জ প্রিয়াঙ্কা রানী সরকার। তিনি বলেন, “অধিকাংশ রোগী নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। আবহাওয়ার কারণে এমনটা হচ্ছে। কাগজে-কলমে আড়াইশ ওয়ার্ডের হাসপাতাল হলেও সেই অনুপাতে জনবল নেই।”
শহরের তুলনায় দুর্গম পাহাড়ি এলাকার শিশুরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। এমন অবস্থায় বাচ্চাদের বাড়তি যত্নের পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। নবজাতককে বুকের দুধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন শিশু ওয়ার্ডের চিকিৎসক মো. ওমর ফারুক। তিনি বলেন, “ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ আগের চেয়ে বেশি। জনবল কম থাকায় রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। অভিভাবকদের অনুরোধ করব যাতে শিশুদের সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা হয়। বাচ্চার যাতে ঠান্ডা না লাগে তা খেয়াল রাখতে হবে।”