মানব সভ্যতার ইতিহাস হাজার বছরেরও বেশি পুরোনো। আদিম মানুষের গুহাবাস থেকে শুরু করে আধুনিক নগরায়ণ—এই দীর্ঘ যাত্রায় মানুষ গড়ে তুলেছে অসংখ্য শহর, সৃষ্টি করেছে নানা সভ্যতা। এ ইতিহাসের প্রতিটি অধ্যায়ে লুকিয়ে আছে অগণিত বিস্ময়কর ঘটনা, অজানা রহস্য আর হারিয়ে যাওয়া সমৃদ্ধির কাহিনি। কালের আবর্তে অনেক সমৃদ্ধ নগরী হারিয়ে গেছে, লুপ্ত হয়েছে বহু জনপদ। তাদের কিছু হয়তো কল্পকাহিনির অংশ, কিছু আবার ইতিহাসের পাতায় লিপিবদ্ধ। কোনো কোনো শহরের কথা আমরা জানি শুধু কিংবদন্তির মাধ্যমে, আবার কোনো কোনো শহরকে ইতিহাসবিদরা উদ্ধার করেছেন মাটি ও পাথরের স্তূপের নিচ থেকে। আজ আমরা জানব এমনই কিছু বিখ্যাত হারিয়ে যাওয়া শহরের গল্প, যেগুলো আমাদের নিয়ে যায় অতীতের রহস্যময় ভুবনে।
পাথর কেটে গড়া পেত্রা: মরুভূমির গোলাপ
১৮১২ সালে সুইস পরিব্রাজক জোহান লুডভিগ বুরখার্টের হাত ধরে বিশ্বের সামনে উঠে আসে এক অনিন্দ্যসুন্দর নগরী—পেত্রা। বর্তমান জর্ডানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে হুর পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত এই শহরটির নাম পেত্রা, গ্রিক শব্দ, যার অর্থ পাথর। নামের মতোই এ শহরটি পাথরের মধ্যে কেটে তৈরি। পাহাড়ের ফাঁকে সরু গিরিপথ দিয়ে প্রবেশ করে দেখা মেলে পেত্রার বিস্ময়কর স্থাপত্যশৈলীর।
পেত্রা মূলত একটি গিরিনগরী, যা কোনো কোনো স্থানে মাত্র ১২ ফুট চওড়া। পাথরের দেয়ালের গায়ে খোদাই করা অসংখ্য প্রাচীন দালান আর স্থাপনা চোখে পড়ে এখানে। এর মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত হলো ‘খাজনেত এল-ফিরাউন’ বা ‘ফেরাউনের কোষাগার’। এটি একটি বিশাল মন্দির, যা খোদাই করা হয়েছে সরাসরি পাহাড়ের গায়ে। মন্দিরের স্থাপত্যশৈলী এতই নিখুঁত যে, তা আজও পর্যটকদের মুগ্ধ করে।
পেত্রায় রয়েছে একটি অর্ধবৃত্তাকার নাট্যশালা, যেখানে একসঙ্গে প্রায় ৩ হাজার লোকের বসার ব্যবস্থা ছিল। এখানকার প্রতিটি স্থাপনায় দেখা যায় গ্রিক, রোমান ও নাবাতাইন সংস্কৃতির মিশ্রণ। পেত্রা একসময় ছিল নাবাতাইন রাজ্যের রাজধানী, যা ৪০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ১০৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। নাবাতাইনরা ছিলেন আরব বংশোদ্ভূত এক জাতি, যারা বাণিজ্যে বিশেষ দক্ষ ছিলেন।
পশ্চিমের গাজা, উত্তরের বসরা ও দামাস্কাস, লোহিত সাগরের আকাবা ও লেউকে কোমে এবং মরুভূমির ওপর দিয়ে পারস্য উপসাগরে যাওয়ার প্রধান বাণিজ্যিক পথগুলো নিয়ন্ত্রণ করত পেত্রা। এ শহর ছিল বাণিজ্য ও সংস্কৃতির মিলনস্থল। সিল্ক রোডের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল পেত্রা। এখান থেকে সুগন্ধি, মশলা, হাতির দাঁত, রেশমসহ নানা পণ্য বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে যেত।
রোমান শাসনের সময় সমুদ্রকেন্দ্রিক বাণিজ্যের উত্থান হলে পেত্রার গুরুত্ব কমতে থাকে। ১০৬ খ্রিস্টাব্দে রোমানরা পেত্রা দখল করে তাদের ‘আরবিয়া পেট্রায়া’ প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত করে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় শতকে পালমিরা শহরটি পেত্রার বাণিজ্যিক দখল নেয়। এরপর থেকে পেত্রা ধীরে ধীরে তার গৌরব হারাতে থাকে।
সপ্তম শতকে মুসলমানরা পেত্রার দখল নেন, তবে তখনও শহরটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। দ্বাদশ শতকে ক্রুসেডাররা পেত্রায় আসেন, কিন্তু তারা এটি পুনর্গঠন করেনি। এরপর থেকে পেত্রা সম্পূর্ণভাবে পরিত্যক্ত হয়ে যায়। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এটি বিশ্ববাসীর অজানাই ছিল। ১৯৮৫ সালে ইউনেস্কো একে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে ঘোষণা করে। আজও পেত্রা তার অপূর্ব স্থাপত্যশৈলী ও রহস্যময় ইতিহাসের জন্য পর্যটকদের আকর্ষণ করে। ‘মরুভূমির গোলাপ’ নামে পরিচিত পেত্রা এখন জর্ডানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র।
ভিসুভিয়াসের ছাইয়ে ঢাকা পম্পেই
ইতালির কাম্পানিয়া অঞ্চলের ছোট্ট শহর পম্পেই। আধুনিক নেপলসের কাছে অবস্থিত এ শহরটি ছিল রোমান সাম্রাজ্যের একটি সমৃদ্ধ নগরী। সমৃদ্ধ বাণিজ্য, সংস্কৃতি ও জীবনযাপনে পূর্ণ ছিল পম্পেই। ৭৯ খ্রিস্টাব্দে হঠাৎই ভিসুভিয়াস আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে মাত্র দুই দিনে সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায় পম্পেই। ৬০ ফুট উঁচু ছাই আর ঝামাপাথরের নিচে চাপা পড়ে শহরটি। পম্পেইসহ আশপাশের হারকিউলানিয়াম ও স্ট্যাবিয়াই শহরগুলোও একই অগ্ন্যুৎপাতে পুড়ে যায়।
এর আগে ৬২ খ্রিস্টাব্দে এক ভয়াবহ ভূমিকম্পে পম্পেই নগরী মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তা সত্ত্বেও নগরবাসী পুনর্নির্মাণ কাজে ব্যস্ত ছিল। কিন্তু প্রকৃতির সতর্কবার্তা উপেক্ষা করে তারা বুঝতে পারেনি, আরও বড় বিপর্যয় তাদের অপেক্ষায়। অগ্ন্যুৎপাতের পর পম্পেই হারিয়ে যায় ইতিহাসের গর্ভে।
দীর্ঘদিন পর ১৫৯৯ সালে পম্পেইয়ের একটি অংশ মাটি থেকে বেরিয়ে আসে। তবে সঠিকভাবে পুনঃখনন শুরু হয় ১৭৪৮ সালে। এরপর থেকে পম্পেই হয়ে ওঠে প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণার এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এখান থেকে পাওয়া যায় রোমানদের দৈনন্দিন জীবনের নিদর্শন। ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, মন্দির, থিয়েটার, বাথহাউস—সবই প্রায় অক্ষত অবস্থায় ছিল ছাইয়ের নিচে। এমনকি মানুষের দেহাবশেষও পাওয়া যায়, যা আমাদের নিয়ে যায় সেই প্রাচীন রোমের জীবনে, যা অন্য কোথাও পাওয়া যায় না।
পম্পেই আমাদেরকে দেখায়, কীভাবে রোমানরা জীবনযাপন করত। তাদের ঘরবাড়ির সাজসজ্জা, দেয়ালে আঁকা চিত্রকর্ম, মেঝের মোজাইক সবই আজও অটুট রয়েছে। এটি একটি জীবন্ত জাদুঘর, যা আমাদের ইতিহাসের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে। প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণার জন্য পম্পেই একটি অমূল্য স্থান, যা আমাদের অতীতের জীবনধারা সম্পর্কে গভীর ধারণা দেয়।
রহস্যময় আটলান্টিস: সত্য নাকি কল্পনা?
পৃথিবীর অন্যতম রহস্যময় স্থানের কথা বললে আটলান্টিসের নাম সবার আগে আসে। গ্রিক দার্শনিক প্লেটো প্রথম এ রহস্যময় দ্বীপের কথা উল্লেখ করেন তার দুইটি সংলাপ ‘টিমায়াস’ ও ‘ক্রিতিয়াস’-এ। তার বর্ণনা অনুযায়ী, আটলান্টিস ছিল অসম্ভব উন্নত ও সুশৃঙ্খল এক দ্বীপ, যা বর্তমান জিব্রাল্টার প্রণালীর বাইরে অবস্থিত ছিল। এখানে ছিল অদ্ভুত সব আবিষ্কার, সুন্দর সমাজব্যবস্থা আর আধুনিক জীবনধারা।
আটলান্টিস ছিল এক ঐশ্বর্যময় এলাকা। সোনা, রুপা আর তামার আকরিক ভরা খনি, সুজলা-সুফলা পরিবেশ—সব মিলিয়ে এক স্বর্গীয় স্থান। দ্বীপটির কেন্দ্রস্থলে ছিল রাজপ্রাসাদ, যাকে ঘিরে রেখেছিল তিনটি খাল। রাজা অ্যাটলাস ও তার নয় ভাই নিয়মিত মিলিত হতেন প্রাসাদের মন্দিরে। তাদের সুশাসনে দ্বীপটির বাসিন্দারা সুখে শান্তিতে দিন কাটাত।
কিন্তু আটলান্টিসবাসীরা ক্রমে ঈশ্বরের নিয়ম উপেক্ষা করে অহংকারী হয়ে ওঠে। তারা পৃথিবী জয়ের বাসনা নিয়ে গ্রিসসহ অন্যান্য দেশ আক্রমণ শুরু করে। এর ফলে ঈশ্বর তাদের শাস্তি দেন। ভয়ংকর ভূমিকম্প ও বন্যায় মাত্র এক দিন এক রাতে পুরো দ্বীপটি সাগরের তলায় ডুবে যায়।
বাস্তবে আটলান্টিসের অস্তিত্ব ছিল কিনা, তা আজও রহস্য। অনেকেই মনে করেন, এটি প্লেটোর কল্পনা। তবে কিছু গবেষক বিশ্বাস করেন, আটলান্টিস সত্যিই ছিল, এবং এটি বর্তমান সান্তোরিনি দ্বীপ হতে পারে, যা প্রাচীনকালে থেরা নামে পরিচিত ছিল। সেখানেও ভয়ংকর আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে মাইনোয়ান সভ্যতা ধ্বংস হয়েছিল। তবে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট প্রমাণ নেই। আটলান্টিসের রহস্য এখনও মানুষকে ভাবিয়ে তোলে, গবেষণা চলছেই।
অ্যাংকর: কম্বোডিয়ার হারানো গৌরব
কম্বোডিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত অ্যাংকর নগরী একসময় ছিল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী সাম্রাজ্যের কেন্দ্রবিন্দু। খ্রিস্টপূর্ব ৮০২ সালে রাজা জয়বর্মণ দ্বিতীয় জাভার সম্রাটের কাছ থেকে কম্বুজাকে স্বাধীন করে প্রতিষ্ঠা করেন খেমার সাম্রাজ্য। অ্যাংকর ছিল এই সাম্রাজ্যের রাজধানী। এটি সেই সময়ের অন্যতম অভিজাত ও সমৃদ্ধ নগরী। এখানে বাস করত প্রায় সাড়ে সাত লাখ মানুষ, যা সেই যুগের জন্য ছিল অবিশ্বাস্য।
আংকরিয়ানরা পাথর খোদাইয়ে ছিলেন অদ্বিতীয়। তাদের দক্ষতার প্রমাণ মেলে বিশাল বিশাল মন্দির ও স্থাপনায়। এর মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত হলো ‘অ্যাংকর ওয়াট’ মন্দির, যা বিশ্বের বৃহত্তম ধর্মীয় স্থাপনা হিসেবে পরিচিত। হিন্দু দেবতা বিষ্ণুকে উৎসর্গ করে তৈরি এই মন্দিরটি পরে বৌদ্ধ মন্দিরে পরিণত হয়। মন্দিরের দেয়ালে খোদাই করা আছে রামায়ণ ও মহাভারতের কাহিনি।
এছাড়াও রয়েছে ‘অ্যাংকর থম’, যা ছিল রাজকীয় নগরী। এখানে রয়েছে ‘বায়ন’ মন্দির, যেখানে পাথরের বিশাল মুখমণ্ডল খোদাই করা রয়েছে। এখানে পাওয়া খোদাইকৃত পাথরে ওই সময়ের গবাদিপশুর বর্ণনা পাওয়া যায়। অ্যাংকর নগরী ছিল স্থাপত্যশিল্প, ধর্ম ও সংস্কৃতির মিলনস্থল।
১৪৩১ সালে থাই রাজা অযোধ্যার হাতে পরাজিত হয়ে অ্যাংকর নগরী ধ্বংস হয়। এরপর দীর্ঘদিন ধরে নগরীটি জঙ্গলের আড়ালে লুকিয়ে ছিল। ১৮৬০ সালে ফরাসি অভিযাত্রী হেনরি মহো নগরীটি পুনরাবিষ্কার করেন। ২০০৭ সালে একদল গবেষক উপগ্রহ চিত্র ও আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে প্রমাণ করেন, অ্যাংকর শিল্পযুগের আগে স্থাপিত সবচেয়ে বড় শহর। তাদের মতে, এ শহরের আয়তন ছিল ১,১৫০ বর্গকিলোমিটার। বর্তমানে অ্যাংকর ওয়াট কম্বোডিয়ার জাতীয় প্রতীকে পরিণত হয়েছে।
ট্রয়: সুন্দরী হেলেনের শহর
ধ্বংসপ্রাপ্ত নগরীগুলোর মধ্যে অন্যতম বিখ্যাত হলো ট্রয়। গ্রিক মহাকাব্য ‘ইলিয়াড’ ও ‘ওডিসি’তে বর্ণিত এই শহরকে কেন্দ্র করেই সংঘটিত হয়েছিল ট্রয়ের যুদ্ধ। ট্রয়ের নাগরিক ও সংস্কৃতিকে বোঝাতে ‘ট্রোজান’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়।
ট্রয় নগরীর প্রকৃত অবস্থান নিয়ে মতভেদ থাকলেও অনেকেই মনে করেন, এটি বর্তমান তুরস্কের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে, দার্দানেলস প্রণালীর কাছে অবস্থিত ছিল। সুন্দরী হেলেনকে নিয়ে ট্রয়ের রাজপুত্র প্যারিস ও স্পার্টার রাজা মেনেলাউসের মধ্যে বিরোধের ফলে সংঘটিত হয় ট্রয়ের যুদ্ধ। দশ বছর ধরে চলা এই যুদ্ধে ট্রয় নগরী ধ্বংস হয়।
রোমান সম্রাট অগাস্টাসের রাজত্বকালে প্রাচীন ট্রয় নগরীর ধ্বংসস্তূপের ওপর ইলিয়াম নামে নতুন শহর নির্মিত হয়। তবে বাইজান্টাইন শাসনামলে এটি ধীরে ধীরে পতনের পথে যায়।
১৮৭০ সালে জার্মান প্রত্নতাত্ত্বিক হাইনরিশ শ্লিমান ট্রয়ের সম্ভাব্য স্থানে খননকাজ শুরু করেন। তিনি একের পর এক স্তরে বেশ কয়েকটি শহরের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কার করেন। ধারণা করা হয়, এর মধ্যেই রয়েছে হোমারের বর্ণিত ট্রয়। যদিও এ নিয়ে বিতর্ক আছে, তবে হিত্তীয় রচনায় উল্লেখিত উইলুসা শহরটি এখানেই অবস্থিত ছিল বলে অনেকের ধারণা। অনেকে মনে করেন, ইলিয়ন নামটি উইলুসার গ্রিক সংস্করণ।
হারানো শহর, হারানো গল্প
মানুষের কৌতূহল অসীম। হারিয়ে যাওয়া শহরগুলোর গল্প আমাদের সেই কৌতূহলকে আরও বাড়িয়ে তোলে। পেত্রা, পম্পেই, আটলান্টিস, অ্যাংকর ও ট্রয়ের মতো নগরীগুলো আমাদের প্রাচীন সভ্যতার সমৃদ্ধি ও বিপর্যয়ের কাহিনি শোনায়। এগুলো শুধু ইতিহাস নয়, আমাদের জন্য শিক্ষা। সময়ের আবর্তে সবকিছুই বদলে যায়, হারিয়ে যায়। কিন্তু মানুষের জ্ঞানপিপাসা আর অনুসন্ধিৎসু মন সবকিছুকে খুঁজে বের করে আনে। এভাবেই আমরা জানতে পারি আমাদের অতীত, আমাদের শেকড়।
এই হারানো শহরগুলো আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, সভ্যতা যতই উন্নত হোক না কেন, প্রকৃতির সামনে আমরা অসহায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যুদ্ধ-বিগ্রহ বা অন্যান্য কারণে সমৃদ্ধ নগরীগুলো ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। তাই আমাদের উচিত অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক থাকা। প্রাচীন এই নগরীগুলো আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, মানবজাতির স্থায়িত্ব নির্ভর করে আমাদের প্রজ্ঞা, সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ জীবনের ওপর।
হারিয়ে যাওয়া এই নগরীগুলোর গল্প আমাদের নিয়ে যায় এক রোমাঞ্চকর অভিযানে, যেখানে ইতিহাস আর কল্পনার সীমারেখা মিশে যায়। এগুলো আমাদের প্রেরণা দেয় নতুন করে ভাবতে, জানতে এবং শিখতে। অতীতের এই শিক্ষাগুলোকে সঙ্গী করে আমরা এগিয়ে যেতে পারি এক উন্নত ভবিষ্যতের পথে।