রবিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৪
প্রচ্ছদলিডচবির নতুন দুটি হল: উদ্বোধনের ৮ বছর পরও আসন...

চবির নতুন দুটি হল: উদ্বোধনের ৮ বছর পরও আসন বরাদ্দ নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক

শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিরসনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও অতীশ দীপঙ্কর নামে দুটি নতুন হল নির্মাণ করা হলেও উদ্বোধনের প্রায় ৮ বছর পরেও আসন বরাদ্দ পাচ্ছেন না শিক্ষার্থীরা। হল দুইটিতে মোট ১০৫০ জন শিক্ষার্থী থাকতে পারবে।

এতে আবাসন সুবিধা বাড়বে ৩.৪০ শতাংশ। অথচ শিক্ষার্থীদের আসন বরাদ্দ না দিলেও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে প্রভোস্ট ও কর্মকর্তা-কর্মচারী। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা আবাসন সংকটে চরম দুর্ভোগে দিনাতিপাত করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের তুলনায় আবাসন ব্যবস্থা আছে সব মিলিয়ে প্রায় ২৩ শতাংশ। যা খুবই অপ্রতুল।

বাহিরে মেস বা কটেজে থাকতে হলে গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। যা বহন করা শিক্ষার্থীদের জন্য কষ্টকর হয়ে যায়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে নেই শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে মেস বা কটেজের সুবিধা। অবশেষে শিক্ষার্থীদের দৌড়াতে হচ্ছে শহরের দিকে।

এদিকে, দীর্ঘ ৮ বছর পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আবাসিক হলগুলোতে আসন বরাদ্দ দিলেও বঙ্গবন্ধু ও অতীশ দীপঙ্কর হলের নানারকম সমস্যা দেখিয়ে সেখানে আসন বরাদ্দ দেয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অতিদ্রুত হল দুইটিতে আসন বরাদ্দ দেওয়ার আশ্বাস দিলেও তা কার্যকর হচ্ছে না।

গত এক বছরে অন্তত পাঁচবার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে হলটি খুলে দেয়া হবে। সর্বশেষ আশ্বাসের দুই মাস গেলেও এখনও কোনো কার্যক্রম দেখছেন না শিক্ষার্থীরা।

বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে আটাশ থেকে ত্রিশ হাজার শিক্ষার্থী। আবাসন ব্যবস্থা আছে মাত্র ২৩ শতাংশের মতো। যা তাদের জন্য এক প্রকার দুর্ভোগের কারণ।

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী মো. শামীম ইসলাম বলেন, “আমার বাড়ি দিনাজপুর। আমি এত দূর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছি পড়ার জন্য। কিন্তু আমি কি পড়বো? নিজের থাকার জায়গাটাও ভালোমতো পাচ্ছি না।”

চবিতে মোট ১২টি আবাসিক হল রয়েছে। এর মধ্যে ৭টি ছাত্রদের, ৫টি ছাত্রীদের জন্য। ১২টি হলে মোট আসন রয়েছে ৫ হাজার ৩০৭টি। এতে মোট শিক্ষার্থীর মাত্র ১৯.৩১ শতাংশ শিক্ষার্থী আবাসিক সুবিধা পায়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও অতীশ দীপঙ্কর হল চালু হলে আবাসিক সুবিধার হার ৩.৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২২.৬৪ শতাংশে উন্নীত হবে।

২০১৫ সালের ৮ অক্টোবর ছাত্রদের জন্য ১৮৬ আসন বিশিষ্ট প্রায় ৪৫ হাজার বর্গফুটের দোতলা বিশিষ্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের উদ্বোধন করা হয়।

পরবর্তীতে ২০১৭ সালের মে মাস থেকে হলটির ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণের কাজ শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর মধ্যে ১৮৬ আসন বিশিষ্ট দোতলা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলকে ৭৩৮ আসন বিশিষ্ট ছয় তলা ভবন করা হয়।

অপরদিকে ২০১৬ সালের ২১ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু হলের পাশে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয় অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান হলের। ২০১৮ সালের ৩০ মে মাসে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে হলটির প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হলেও পুনরায় বর্ধিত করে কাজের পরিধি বাড়ানো হয়।

অতীশ দ্বীপঙ্কর হলের প্রভোস্ট এ.জি.এম. নিয়াজ উদ্দিন বলেন, “আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর দেখছি নতুন হলে অনেক ত্রুটিপূর্ণ কাজ। যে কাজগুলোর কারণে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি পোহাতে হবে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ–উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “আমরা হল প্রভোস্টদের সাথে কথা বলেছি, কিছু ত্রুটিপূর্ণ কাজ আছে। যেগুলো দুই সপ্তাহের মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে। আমরা জানুয়ারি মাসে শিক্ষার্থীদের ডাকবো এবং সিট বরাদ্দ দিব।”

এই বিভাগের আরও পড়ুন