চট্টগ্রামের শিল্প খাতে বিদেশিদের প্রভাব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের মেধাবীরা উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে গিয়ে আর ফিরে না আসায় গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে বিদেশিদের নিয়োগ দিতে বাধ্য হচ্ছে দেশীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো। ফলে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা রেমিট্যান্স হিসেবে বিদেশে চলে যাচ্ছে।
সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের শিল্প খাতে প্রায় দুই হাজার বিদেশি কাজ করছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের সিইও, ভাইস প্রেসিডেন্ট, জেনারেল ম্যানেজারের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত ব্যক্তিরা। চট্টগ্রাম ইপিজেডে ৩৫০ জনেরও বেশি বিদেশি ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে কাজ করছেন। কর্ণফুলী ইপিজেড এবং কোরিয়ান ইপিজেডেও বিদেশিদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য।
বিদেশিদের বেতন পরিশোধ করা হয় ডলারে। এদের বেতন ছয় ডিজিটের নিচে নয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দেশের মেধা বিদেশে পড়াশোনা করে দেশে ফিরে আসলে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ দেশে রাখা সম্ভব হতো।
দেশের মেধাবীরা উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, মালয়েশিয়া, চীন, জাপানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যান। এর মধ্যে অনেকে পড়াশোনা শেষে সংশ্লিষ্ট দেশে কাজ করার সুযোগ পেয়ে থেকে যান।
দেশে ভালো চাকরির নিশ্চয়তা না থাকা, জীবনমানের অনিশ্চয়তা, সামাজিক নিরাপত্তার অভাব, চাকরির দুর্বল বেতন কাঠামো ইত্যাদি কারণে তারা দেশে ফিরতে আগ্রহী হন না।
চট্টগ্রামের একটি শিল্প গ্রুপের মালিক জানান, বিদেশিরা প্রচুর পরিশ্রমী এবং দক্ষ। তাদের ইংরেজি জ্ঞান ও যোগাযোগ দক্ষতা অসাধারণ। তাই তাদের বিকল্প দেশ থেকে নেওয়া সম্ভব হয় না। তিনি আরও জানান, দেশের অনেক গ্র্যাজুয়েট এবং মাস্টার্স করা প্রকৌশলী ইংরেজিতে দুর্বল।
চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ জানান, শিল্প এবং বাণিজ্য খাতের ডিমান্ডের সাথে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার মিল নেই। কাজের ডিমান্ড অনুযায়ী কারিকুলাম না সাজালে এই অবস্থা থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়।
চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আবদুস সোবহান জানান, চট্টগ্রাম ইপিজেডে সাড়ে তিনশর মতো বিদেশিকে কাজ করার ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু করা হয়েছে। তিনি বলেন, বিদেশি কোম্পানিগুলোর পাশাপাশি দেশীয় কোম্পানিতেও বিদেশি নাগরিক কাজ করেন।