চট্টগ্রাম মহানগরীতে পরিকল্পিত স্যুয়ারেজ প্রকল্প বাস্তবায়নের আরো দুটি ক্যাচমেন্টের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি অর্থের একটি প্রকল্প গতকাল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পেয়েছে।
এই প্রকল্পের আওতায় কালুরঘাট এবং বাকলিয়া অঞ্চলে স্যুয়ারেজ লাইন স্থাপন করা হবে। তবে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য আলাদা একটি প্রকল্পের অনুমোদনের পরই এই প্রকল্পের কাজ শুরু করা সম্ভব হবে।
ইতোপূর্বে শুরু হওয়া ক্যাচমেন্ট-১ এর কাজ ইতোমধ্যে ৬০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়াও ফ্রান্সের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা এএফডি’র অর্থায়নে কাট্টলী এলাকার ক্যাচমেন্ট-৫ এর জন্য ২৭শ’ কোটি টাকার অপর একটি প্রকল্প আগামী একনেক সভায় অনুমোদন পেতে পারে।
চট্টগ্রাম মহানগরীকে ৬টি পৃথক ক্যাচমেন্টে বিভক্ত করে নেয়া পরিকল্পিত স্যুয়ারেজ প্রকল্পের কাজ ধীরে ধীরে গতি পাচ্ছে। ৭০ লাখেরও বেশি মানুষের বসবাস এই নগরীতে।
এতদিন পরিকল্পিত কোনো স্যুয়ারেজ ব্যবস্থা না থাকায় নগরীর বর্জ্য পানি সরাসরি নদীতে পড়ছে, যা পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ।
এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রামের পরিবেশের উন্নয়ন হবে এবং জনস্বাস্থ্যের উন্নতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
চট্টগ্রামে বাস্তবায়নাধীন স্যুয়ারেজ প্রকল্পের আওতায় ক্যাচমেন্ট-২ (কালুরঘাট) এবং ক্যাচমেন্ট-৪ (বাকলিয়া) এর জন্য ৫ হাজার ১৫২ কোটি ৫৬ লাখ টাকার একটি প্রকল্প একনেকে অনুমোদিত হয়েছে। কালুরঘাটের হামিদচর এলাকায় ৭৪ একর জায়গায় এবং বাকলিয়া মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপরীত পাশে ৭৪ একর জায়গায় দুটি ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মাণ করা হবে। জাইকা, বাংলাদেশ সরকার এবং চট্টগ্রাম ওয়াসা যৌথভাবে এই প্রকল্পে অর্থায়ন করবে।
অন্যদিকে, ২০২২ সালে শুরু হওয়া ক্যাচমেন্ট-১ এর কাজ ইতোমধ্যে ৬০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। এই ক্যাচমেন্টের আওতায় নগরীর ২১টি ওয়ার্ডের ২৮ হাজার বাড়ি ঘরে স্যুয়ারেজ লাইন সংযুক্ত করা হচ্ছে এবং ২০০ কিলোমিটারেরও বেশি পাইপ লাইন স্থাপন করা হচ্ছে। হালিশহরের চৌচালায় ১৬৩ একর ভূমিতে দুইটি ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মাণ করা হচ্ছে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ক্যাচমেন্ট-৫ (কাট্টলী) এর জন্য ২৭শ’ কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্ল্যানিং কমিশনে রয়েছে। ক্যাচমেন্ট-১ এর কাজ আগামী বছরের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে, তবে অন্যান্য ক্যাচমেন্টগুলো বাস্তবায়নে ২০৩০ সাল পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার আরিফুল ইসলাম বলেন, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্পটি চট্টগ্রামকে বিশ্বমানের নগরীতে পরিণত করার যাত্রা অনেকটা এগিয়ে দেবে।