সোমবার, ২০ জানুয়ারি ২০২৫
প্রচ্ছদঅর্থ-বাণিজ্যনানা সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে তৈরি পোশাক খাত, রপ্তানি...

নানা সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে তৈরি পোশাক খাত, রপ্তানি বাড়ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

নানা সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে দেশের তৈরি পোশাক খাত। দীর্ঘ সময় ধরে অস্থিরতা বিরাজ করলেও বর্তমানে স্থিতিশীলতা ফিরে আসছে। কারখানাগুলোতে পুরোদমে কর্মযজ্ঞ চলছে। ক্রেতাদের মধ্যেও আস্থা ফিরে আসছে এবং নতুন নতুন অর্ডার আসছে। গেল পাঁচ মাস ধরে ধারাবাহিকভাবে রপ্তানিও বাড়ছে।

এদিকে সরকারপ্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন হওয়ায় অন্তর্বর্তী সরকারের নিকট এ খাতের উদ্যোক্তাদের অনেক প্রত্যাশা। সরকার সঠিক উদ্যোগ নিলে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক আরও শক্ত অবস্থান তৈরি করতে পারবে বলে আশা তাদের। তবে স্থানীয়ভাবে বেশ কিছু সংকট এখনও রয়ে গেছে। এগুলো জরুরি ভিত্তিতে সমাধান চান তারা।

খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, চলতি বছরের জাতীয় নির্বাচনের আগে থেকেই দেশের তৈরি পোশাক খাতে অস্থিরতা শুরু হয়। বেতন বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিক অসন্তোষ, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর নতুন করে শ্রমিক অসন্তোষ, কারখানাগুলোতে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর- এই সবকিছু মিলে পুরো পোশাক খাতে অস্থিরতা নেমে আসে। অন্তর্বর্তী সরকারের কঠোর পদক্ষেপে মালিক পক্ষ শ্রমিকদের দাবি মেনে নেয়। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

নতুন সরকারের কাছে প্রত্যাশার কথা জানিয়ে ব্যবসায়ীরা বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন। এটা বাংলাদেশের জন্য বড় প্রাপ্তি। তিনি বিশ্ব নেতাদের অনুরোধ করলে কেউ ফেলে দেবেন না। আগামী বছর বাংলাদেশের পোশাক খাতের অবস্থা আরও ভালো হবে বলে আশা করছেন তারা।

অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকে রপ্তানি বৃদ্ধির চিত্র উঠে এসেছে বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্যে। গত পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) সামগ্রিক পণ্য রপ্তানির ৮১ শতাংশ তৈরি পোশাক খাত থেকে এসেছে। এ সময়ে ১ হাজার ৬১২ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১২ শতাংশ বেশি।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানির বড় বাজার ইউরোপেও আগের তুলনায় রপ্তানি বাড়ছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে ইউরোপে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ।

এদিকে হঠাৎ করে গত ১৫ ডিসেম্বর জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বেক্সিমকো গ্রুপের ১৫টি পোশাক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে। এতে প্রায় ৪০ হাজার কর্মী কর্মহীন হয়ে পড়বে। নতুন করে এই অস্থিরতা পোশাক খাতে নতুন সংকট তৈরি করবে বলেও আশঙ্কা করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।

পোশাক খাতের সার্বিক পরিস্থিতি জানতে চাইলে বাংলাদেশ নিট পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ’র সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, পোশাক খাতের সার্বিক পরিস্থিতি আগের তুলনায় অনেক উন্নতি হয়েছে। কারখানাগুলোতে কাজের পরিবেশ ফিরে এসেছে। নতুন নতুন অর্ডার আসছে।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকারপ্রধানের নিকট ব্যবসায়ীদের অনেক প্রত্যাশা। তাকে সারা বিশ্ব চেনে। বিশ্ব নেতারা তার পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। এ সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।

তিনি আরও বলেন, অভ্যন্তরীণ বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। এর মধ্যে গ্যাস-বিদ্যুতের সংকট, ব্যাংকিং খাতে অস্থিরতা, এনবিআরের পলিসিগত সমস্যার সমাধান জরুরি।

বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, আগের তুলনায় পরিবেশ অনেকটাই ভালো। তবে ক্রেতারা এখনও পর্যবেক্ষণ করছেন বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবস্থা কোন দিকে যাচ্ছে।

এই বিভাগের আরও পড়ুন