দেশের জ্বালানি খাতের অন্যতম বড় প্রকল্প সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) উইথ ডাবল পাইপলাইন পরিচালনার জন্য আগামী মাসেই উন্মুক্ত টেন্ডার আহ্বান করা হবে। ইতোমধ্যে টেন্ডারের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সাগর থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল সংগ্রহের কার্যক্রম শুরু হলে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) বছরে অন্তত ৮০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। পাশাপাশি, দেশের জ্বালানি নিরাপত্তাও সুরক্ষিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিপিসি সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে দেশে প্রায় ৭০ লাখ টন জ্বালানি তেলের চাহিদা রয়েছে, যার ৯০ শতাংশই আমদানি করা হয়। আমদানিকৃত তেলবাহী বড় বড় মাদার ভেসেলগুলো চট্টগ্রাম বন্দর চ্যানেলের গুপ্তাখালস্থ জেটিতে ভিড়তে পারে না। বহির্নোঙরে অবস্থান করে লাইটারেজ জাহাজের মাধ্যমে তেল খালাস করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় বিপুল অর্থ খরচের পাশাপাশি প্রচুর সময়ও লাগে।
এই জটিলতা এড়াতে সরকার ‘ইনস্টলেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) উইথ ডাবল পাইপলাইন’ প্রকল্প গ্রহণ করে। ২০১৫ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের মাধ্যমে গভীর সাগরে নোঙর করা মাদার ভেসেল থেকে পাইপলাইনে জ্বালানি তেল ইস্টার্ন রিফাইনারিতে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হয়।
৮ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই প্রকল্পের কমিশনিংয়ের কাজ গত বছরের মার্চে সম্পন্ন হয়। এরপর দুটি জাহাজের মাধ্যমে ডিজেল ও ক্রুড অয়েল খালাস করে পরীক্ষামূলক কার্যক্রমও সম্পন্ন করা হয়। গত বছরের আগস্টে প্রকল্পটি বিপিসিকে বুঝিয়ে দেয় ইআরএল কর্তৃপক্ষ।
এসপিএম টার্মিনালটি পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দক্ষ জনবলের অভাব রয়েছে বিপিসির। নির্মাতা প্রতিষ্ঠান চায়না পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড তিন বছরের জন্য এসপিএম পরিচালনার আগ্রহ প্রকাশ করলেও উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় তাদের কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা এখনই নিশ্চিত নয়।
ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও এসপিএম প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ শরীফ হাসনাত জানান, “মার্চে কমিশনিংয়ের পর আনুষঙ্গিক কাজ শেষে এসপিএম প্রকল্পটি আগস্টে বিপিসিকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। এখন বিপিসি উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে অপারেশন ও মেনটেন্যান্স ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়ার পর পাইপলাইনে জ্বালানি তেল আনার কার্যক্রম শুরু হবে।”