চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) কর্তৃক হিলভিউ আবাসিক এলাকায় সড়কবাতি স্থাপনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। পুরাতন তার ব্যবহার করে নতুন তারের বিল, নিম্নমানের বাতি স্থাপন, এবং পুরাতন মালামাল জমা না দেওয়াসহ একাধিক অভিযোগের তীর এখন চসিকের বিদ্যুৎ বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী কামাল হোসেন সেলিমের দিকে।
শুধু হিলভিউ নয়, পাঁচলাইশ শীতলঝর্ণা আবাসিক এলাকায় বাতি স্থাপনেও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে সেলিমের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে আবাসিক এলাকাটির সভাপতি লিখিত অভিযোগ করলে, চসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) মুহাম্মদ শাফকাত বিন আমিন তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার কথা জানান।
হিলভিউ আবাসিক এলাকায় ২০২৩ সালে সড়কবাতি স্থাপন করে চসিক। একই সড়কে এলইডি বাতি স্থাপনের জন্য গত বছরের জুলাই মাসে পুনরায় ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়। গত বছর নিয়োগকৃত ঠিকাদারের কাজ সমাপ্ত হয়েছে উল্লেখ করে সম্প্রতি বিল তৈরির জন্য নথি উপস্থাপন করেন সহকারী প্রকৌশলী কামাল হোসেন সেলিম।
কিন্তু অভিযোগ ওঠে, পূর্বে বাতি স্থাপনের সময় লাগানো তার নষ্ট হয়নি। একই তার ব্যবহার করে নতুন করে বাতি স্থাপন করা হলেও, প্রাক্কলনে নতুন তারের জন্য বিল ধরা হয়। নতুন বাতিগুলোও নিম্নমানের বলে অভিযোগ উঠেছে।
এইসব অনিয়ম তদন্তে চসিকের প্রধান প্রকৌশলীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এবং বিলের ফাইল আটকে দেওয়া হয়েছে। চসিকের দুই বাতি পরিদর্শক মোহাম্মদ মহসিন ও বাসু বিশ্বাস লিখিত অভিযোগে জানান, বাতি পরিদর্শকদের স্বাক্ষর না নিয়ে গোপনে ঠিকাদারের বিল পরিশোধের জন্য উপস্থাপন করা হয়।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বাতির শেইড নষ্ট দেখিয়ে নতুন নিম্নমানের শেইড স্থাপন করা হয়। ১০৫টি শেইড লাগানোর কথা থাকলেও নতুন স্থাপন করা হয় ৯৯টি। নিয়ম থাকলেও পুরাতন মালামাল স্টোরে জমা করা হয়নি।
প্রাক্কলনে ৪৫০০ মিটার ২৫ এম এম তার ধরা থাকলেও, ওই এলাকায় সব রোডে পূর্বে তার লাগানো ছিল। নতুন করে লাগানো হয়নি। একইভাবে ৬৫০ মিটার ১ দশমিক ৫ আরএম তার স্থাপন ধরা থাকলেও পূর্বের কানেকশনের তার ব্যবহার করা হয়।
শীতলঝর্ণা আবাসিক এলাকায় বাতি স্থাপনের জন্য যে রোড মার্কিং করা ছিল, মূলত সেসব সড়কে বাতি স্থাপন করা হয়নি। নথিতে উল্লেখিত সড়ক বাদ দিয়ে অন্য সড়ক (কম জনবসতিপূর্ণ এলাকা) আলোকিত করার কোনো অনুমোদনও নথিতে দেখা যায়নি।
অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে চসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) মুহাম্মদ শাফকাত বিন আমিন কর্তৃক দাখিলকৃত এক যাচাই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে সহকারী প্রকৌশলী কামাল হোসেন সেলিম বলেন, কাজ যতটুকু হয়েছে ততটুকু বিল দেয়া হবে। তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন।
চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম জানান, অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে। সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।