বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
প্রচ্ছদচট্টগ্রামচট্টগ্রামে বিলুপ্তির পথে খেজুর গাছ: কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে...

চট্টগ্রামে বিলুপ্তির পথে খেজুর গাছ: কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক

একসময় চট্টগ্রামের গ্রামাঞ্চলে সারি সারি খেজুর গাছ চোখে পড়লেও কালের বিবর্তনে আজ তা বিলুপ্তির পথে। বহুবিধ উপকারী এই গাছ এবং এর রস থেকে তৈরি নানান উপকরণ আজ অতীতের স্মৃতি হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

মীরসরাই উপজেলার মতো গুরুত্বপূর্ণ জনপদেও খেজুর গাছের সংখ্যা দ্রুত কমছে। পর্যবেক্ষকদের মতে, এভাবে চলতে থাকলে আগামী দুয়েক দশকের মধ্যে শীতকালে খেজুর রস পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়বে।

গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের অংশ এই খেজুর গাছ রক্ষায় বন বিভাগ বা কৃষি বিভাগের তেমন কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ে না। অথচ পাহাড়ি অঞ্চল, উপকূল এবং পতিত জমিতে খেজুর গাছ রোপণের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।

চট্টগ্রাম জেলা উপ–সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান জানান, ২০২২–২৩ অর্থবছরে চট্টগ্রামে ১৯৫ হেক্টর জমিতে নতুন করে খেজুর গাছের আবাদ হয়েছে। তবে বর্তমানে মোট কতটি খেজুর গাছ আছে তার কোনো সঠিক পরিসংখ্যান কৃষি বিভাগের কাছে নেই।

বিভিন্ন উপজেলার কৃষি সুপারভাইজাররা জানান, খেজুর গাছ বিতরণ কার্যক্রম কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ। মীরসরাই উপজেলার কৃষি সুপারভাইজার কাজী নুরুল আলম বলেন, বর্তমানে মীরসরাই উপজেলায় প্রায় ৫ হাজার খেজুর গাছ আছে, যা দশ বছর আগে ছিল প্রায় ১০ হাজার।

গবেষণায় দেখা গেছে, চট্টগ্রাম জেলায় বর্তমানে ৫০ হাজার খেজুর গাছ আছে, যা দশ বছর আগে ছিল লক্ষাধিক। বিশেষজ্ঞদের মতে, কেবল চট্টগ্রামেই ২০ লক্ষাধিক খেজুর রসের ভোক্তা রয়েছে।

মীরসরাই উপজেলার উপকূলীয় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কিছু গাছি এখনও খেজুর রস সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। তবে গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় তাদের আয় কমছে।

পুষ্টি বিশেষজ্ঞদের মতে, খেজুর রস প্রচুর পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। খেজুর রসের স্বাস্থ্যগুণ থাকলেও সরবরাহের অভাবে অনেক ভোক্তাই তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

বোয়ালখালীর মতো কিছু উপজেলায় খেজুর গাছ প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে। ফলে নতুন প্রজন্ম খেজুর রসের স্বাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

খেজুর গাছ রক্ষায় বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, খেজুর গাছ বনের গাছ না হলেও এর গুরুত্ব অনেক। এই গাছ রক্ষায় বন বিভাগের পাশাপাশি সামাজিক উদ্যোগও গুরুত্বপূর্ণ।

এই বিভাগের আরও পড়ুন