টেন্ডার ছাড়াই দীর্ঘ এক দশক ধরে বেসরকারি খাতে পরিচালিত হয়ে আসছিল বাংলাদেশ রেলওয়ের ২৪টি ট্রেন। রেলওয়ে আইন অনুযায়ী চার বছরের জন্য বেসরকারি খাতে ট্রেন পরিচালনার লিজ দেওয়া হলেও, প্রভাব খাটিয়ে এই ২৪টি ট্রেন এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চুক্তির মেয়াদ বাড়িয়ে চালিয়ে আসছিল একটি মহল।
ফলে বছরের পর বছর বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল রেলওয়ে। সম্প্রতি চুক্তির শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগে এই ২৪টি ট্রেনের লিজ বাতিল করেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, টেন্ডারবিহীন এই ট্রেনগুলো বিগত সরকারের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত সালাউদ্দিন রিপন ও তার পরিবারের সদস্যদের মালিকানাধীন বিভিন্ন কোম্পানি দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছিল।
রেলপথ মন্ত্রণালয় গত ৩ নভেম্বর রেলওয়ের মহাপরিচালককে চিঠি দিয়ে লিজ বাতিলের বিষয়টি জানায়। এরপর নতুন করে ট্রেনগুলো লিজ দেওয়ার জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের পরিবহন এবং বাণিজ্যিক বিভাগ জানিয়েছে, ২৪টি ট্রেনের মধ্যে ১০টি ট্রেন পূর্বাঞ্চলের এবং ১৪টি ট্রেন পশ্চিমাঞ্চলের।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম বলেন, “বেসরকারিভাবে পরিচালিত ২৪টি ট্রেন নতুনভাবে লিজ দেয়ার জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। আগামী ৮ ও ৯ ডিসেম্বর টেন্ডার জমাদানের শেষ দিন।”
চুক্তি বাতিলের বিষয়ে রেলওয়ের পরিচালক (জনসংযোগ) মো. নাহিদ হাসান খান বলেন, “বেসরকারিভাবে পরিচালিত ২৪টি ট্রেনের লিজ বাতিল করা হয়েছে। ট্রেনগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে টেন্ডারের মাধ্যমে নতুন করে লিজ দেওয়া হবে।”
উল্লেখ্য, জনবল সংকটের কারণে বাংলাদেশ রেলওয়ে ১৯৯৭ সাল থেকে বেসরকারি খাতের সঙ্গে ট্রেন পরিচালনার কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমানে মোট ৩৭টি ট্রেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে।
বিভিন্ন জটিলতার কারণে ২০১৯ সালে বেসরকারিভাবে ট্রেন পরিচালনার সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়। বাকি ১৩টি ট্রেনের লিজ বাতিল হবে কিনা সে বিষয়ে এখনো কিছু জানানো হয়নি বলে জানিয়েছেন রেল ভবনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।