ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথ যেন ‘সোনার ডিম পাড়া হাঁস’। গত ১১ মাসে এই রুটে চলাচল করা তিনটি ট্রেন (দুটি আন্তনগর ও একটি স্পেশাল) থেকে প্রায় ৭৬ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
২০২৩ সালের ১১ নভেম্বর দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ উদ্বোধনের পর, ১ ডিসেম্বর ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’ চালুর মাধ্যমে এই রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। এর এক মাস পর, জানুয়ারিতে যুক্ত হয় ‘পর্যটক এক্সপ্রেস’। পরবর্তীতে, চট্টগ্রামবাসীর দাবির মুখে, রমজানের ঈদে একটি বিশেষ ট্রেনও চালু করা হয়।
এই রুটে ট্রেন চালুর ফলে, পর্যটকদের মধ্যে কক্সবাজার ভ্রমণে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। তবে, চাহিদা থাকা সত্ত্বেও, ইঞ্জিন ও কোচ সংকটের কারণে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ গত এক বছরেও ট্রেনের সংখ্যা বাড়াতে পারেনি। চট্টগ্রাম থেকে একটি আন্তনগর ট্রেনের জন্য স্থানীয়দের দাবি এখনো উপেক্ষিত। এমন অভিযোগও উঠেছে যে, বাস কোম্পানিগুলোকে সুবিধা দিতেই রেল কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে উদাসীন।
বর্তমানে, ঢাকা-চট্টগ্রাম হয়ে দুটি আন্তনগর এবং চট্টগ্রাম থেকে একটি বিশেষ ট্রেন চলাচল করছে। যাত্রীদের মতে, ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হলে রাজস্ব আয় দ্বিগুণ হতে পারে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা শওকত জামিল জানান, টিকিটের চাহিদা অনেক বেশি। ইঞ্জিন ও কোচ সংকটের কারণে চাহিদা পূরণ করা যাচ্ছে না। তবে, শীঘ্রই এই রুটে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হবে এবং জানুয়ারি থেকে চট্টগ্রাম থেকে আরও এক জোড়া ট্রেন চলাচল করবে। সেই সাথে, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের স্পেশাল ট্রেনটিও স্থায়ী হবে।
তিনি আরও জানান, গত বছরের ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত, তিনটি ট্রেন থেকে ৭৫ কোটি ৯৭ লাখ ৮২ হাজার ৪২৫ টাকা আয় হয়েছে এবং ১০ লাখ ৩৯ হাজার ২৯৩ জন যাত্রী পরিবহন করা হয়েছে।
দোহাজারী থেকে কক্সবাজারের রামু হয়ে ঘুমধুম পর্যন্ত ১৩০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের জন্য ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিল। প্রথম পর্যায়ে, দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০১ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে ১১ হাজার ৩৬৩ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। রামু থেকে ঘুমধুম অংশের কাজ শুরু না হওয়ায়, ৬ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা এখনো অব্যবহৃত রয়েছে।